রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে মারধরের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তদন্ত প্রতিবেদন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে জমা দেওয়া হবে।
তদন্ত প্রতিবেদনে এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদা আফরিনসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব সরকার।
আরও পড়ুন : এমপি টিটুর সাথে আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে
গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমকে শাহবাগ থানায় নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে।
ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, ওইদিন রাতে এডিসি হারুন আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তা এডিসি সানজিদা আফরিনের সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন দুই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে তাদের নির্যাতন করা হয়।
আরও পড়ুন : ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি ডিসেম্বরে
এ ঘটনার পর এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। আর শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশনস) গোলাম মোস্তফাকে বদলি করা হয়েছে ডিএমপির সংরক্ষণ দফতরে। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়।
সাত কার্যদিবসের তদন্ত শেষে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন জমা দেবে কমিটি। এই সময় ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল, শাহবাগ থানাসহ বেশ কিছু জায়গার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। বক্তব্য নেয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন, এডিসি হারুন ও সানজিদার। নির্যাতনের শিকার ছাত্রলীগ নেতারাও সাক্ষ্য দিয়েছেন।
ডিএমপি যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘একেবারে স্বাধীন নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনাকে উন্মোচন করা এবং দায়ী ব্যক্তি সনাক্ত করা এবং কে কতটুকু দায়ী সেটাও সনাক্ত হবে।’
আলামত পর্যালোচনা করে তদন্ত কমিটি বলছে, স্ত্রী সানজিদা গিয়েছে জেনে ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে হাসপাতালে যান মামুন। সেখানে গিয়ে দেখা হয় এডিসি হারুনের সঙ্গে। পরে হাতাহাতিতে জড়ায় দু-পক্ষ। এক পর্যায়ে হারুন ও সানজিদা ঢুকে পড়ে হাসপাতালের ইটিটি রুমে। পরে শাহবাগ থানায় নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর করে হারুন ও তার সহযোগীরা।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘তদন্ত কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তদন্ত কার্যক্রম সনাক্ত করে। আমাদের যে প্রাপ্ত প্রতিবেদন সেটা তারা আমাদের কমিশনার বরাবর দাখিল করবেন। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশনার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করার সেটা তিনি গ্রহণ করবেন। অথবা আমাদের আইজিপি যিনি আমাদের পুলিশ বাহিনীর অভিভাবক তার কাছে প্রেরণ করবেন।’
Leave a Reply