দেশে ইন্ট্রাভেনাস বা শিরায় প্রয়োগের স্যালাইনের (আইভি ফ্লুইড) কোনো ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রোববার দুপুরে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবির।
অধ্যাপক আহমেদুল দাবি করেছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে কৃত্তিম সংকট তৈরী করায় স্যালাইনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সংকট মোকাবেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আমদানি করা স্যালাইন আগামী রোববার রাতেই দেশে পৌঁছাবে বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, যে সব প্রতিষ্ঠান স্যালাইন তৈরি করে তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করে দেখেছি, কোন ঘাটতি হওয়ার কথা না। সবসময়ই দেশে এমন পরিস্থিতিতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্তিম সংকট তৈরীর চেষ্টা করেন। আমরা সিভিল সার্জনদের মোবাইল কোর্ট চালানোর নির্দেশনা দিয়েছি।’
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা রেকর্ড সংখ্যায় বেড়েছে। রোগীদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোতেও বেড়েছে চাপ। এ পরিস্থিতিতে বাজারে মিলছে না আইভি ফ্লুইড। একজন ডেঙ্গু রোগীর শরীরে প্রতিদিন এক থেকে দুই লিটার স্যালাইন প্রয়োগ করতে হয়। চাহিদা বাড়ার এই সুযোগটাই নিচ্ছে অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। সেসব অভিযানে অবৈধভাবে স্যালাইন মজুতের প্রমাণও মিলছে। এক্ষেত্রে জরিমানা করেও সংকট কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বলছে, স্যালাইন উৎপাদনে ৭টি ঔষধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের চুক্তি রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান দিনে ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করছে। এ পরিস্থিতিতে ৭ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
স্যালাইন আমদানি প্রসঙ্গে অধ্যাপক আহমেদুল বলেন, ‘আমদানি করা স্যালাইন আজই দেশে আসবে। যেসব জায়গায় ক্রাইসিস আছে, সেখানে সরবরাহ করা হবে। এই জায়গাগুলোর তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। মোট ৩ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আসছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে ৪ থেকে ৫ দিন সময় লাগবে।
ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ঢাকার বাইরে বেশি। ডেঙ্গু চিকিৎসার গাইডলাইন প্রান্তিক পর্যায়ের চিকিৎসকদের দেয়া হয়েছে। তাই প্রান্তিক রোগীকে ঢাকায় না পাঠানোর অনুরোধ করা হচ্ছে। এখন উপজেলা পর্যায়েও ডেঙ্গু চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। সেই সাথে প্রত্যেক হাসপাতালে রেপিড রেসপন্স টিম করা হয়েছে। তারা জরুরী রোগীদের অগ্রাধিকার দিবে।’
ডেঙ্গু চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে এমন ক্লিনিকের বিরুদ্ধে সোমবার থেকে অভিযান শুরু হবে বলেও জানা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘যারা চিকিৎসার নামে প্রতারলণা করছে, সেসব ক্লিনিক বন্ধ করা হয়েছে। যাদের লাইসেন্স নাই, মেয়াদোত্তীর্ণ, তাদের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। এদের বিরুদ্ধে আগামীকাল থেকে অভিযান শুরু হবে।
Leave a Reply