1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Editor :
গুলিস্তানে বিস্ফোরণ/ এক ভবনের দুই নকশা - বাংলা টাইমস
রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন

গুলিস্তানে বিস্ফোরণ/ এক ভবনের দুই নকশা

সুপন রায়
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০২৩
  • ৫৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

রাজধানীর গুলিস্তানে কুইন্স টাওয়ারে বিস্ফোরণের চারদিন পেরিয়ে গেছে। তবে বিস্ফোরিত ভবনের মূল নকশা এখনও পায়নি রাজউক। রাজউক নিশ্চিত করে বলতে পারছে না ভবনটির আদৌ কত তলা পর্যন্ত অনুমোদন ছিল। জানা গেছে, যে ভবনে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটি শুরুতে ছিল তিনতলা। ভবনটি কীভাবে সাততলা হলো, তার আদৌ রাজউকের অনুমোদন আছে কি না, সেটা এখনো রাজউকের অজানা। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) পর্যন্ত রাজউকের প্রধান কার্যালয়ে তল্লাশি করেও এ সংক্রান্ত কোন নথি পাওয়া যায়নি।

 

এদিকে, মালিকপক্ষের কাছ থেকে দুই রকম নকশার দুটি অনুলিপি পুলিশ ও রাজউকের হাতে এসেছে। একটি নকশায় ভবনটি ৫ তলা এবং বাণিজ্যিক। অপর নকশা অনুযায়ী ভবনটি ১০ তলা।

রাজউক সূত্রমতে, ১০ তলার নকশার যে অনুলিপি পাওয়া গেছে, তাতে রাজউকের কোনো সিল বা কারও স্বাক্ষর নেই। ৫ তলা ভবনের নকশার যে অনুলিপি, তাতে রাজউকের অথরাইজড অফিসারের স্বাক্ষর আছে, তাতে তারিখ অস্পষ্ট, সাল ১৯৮৩ লেখা। এটাতে একটা স্মারক নম্বর উল্লেখ আছে।


রাজউকের অথরাইজড অফিসার রংগন মণ্ডল (অঞ্চল-৫/১) জানান, ৫ তলার নকশার অনুলিপিতে যে স্মারক নম্বর আছে সেটা রাজউকের নথি জমা ও অনুমোদনসংক্রান্ত নিবন্ধন খাতায় পাওয়া গেছে। কিন্তু মূল নকশা ও অন্যান্য নথি যে ফাইলে থাকে, সেটি পাওয়া যায়নি। যে কারণে ভবনটির নকশা পরে সংশোধন করা হয়েছিল কি না, তা–ও জানা যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, ভবনটি শুরুতে ছিল তিনতলা, পরবর্তী সময়ে সেটি সাততলা করা হয়। বেজমেন্ট থেকে তিনতলা পর্যন্ত ছিল দোকান। চারতলা থেকে সাততলা পর্যন্ত আবাসিক হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তবে ঠিক কবে তিনতলা থেকে সাততলা করা হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভবনটির এমন মিশ্র ব্যবহারে রাজউকের অনুমোদন আছে কি না, জানতে চাইলে সংস্থাটির পরিচালক (অঞ্চল-৫) হামিদুল ইসলাম বলেন, মূল নকশা না পাওয়ায় ভবনটির অনুমোদিত ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। একজন অথরাইজড অফিসারসহ পাঁচ সদস্যের একটি দল মূল নথি খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছে।

৭ মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টার দিকে বিস্ফোরণে ভবনটির বেজমেন্ট থেকে দোতলা পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। পরদিন ভবনের মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমানকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের আরেক ভাই বিদেশে থাকেন।

সিদ্দিকবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির ঝুঁকি নির্ধারণ ও ভবনটি আর ব্যবহার করা যাবে কি না, তা জানতে গত বুধবার ছয় সদস্যের কারিগরি কমিটি গঠন করেছে রাজউক। কমিটি সরেজমিনে ভবনটি পরিদর্শন করেছে। কমিটির আহ্বায়ক ও রাজউকের সদস্য মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী বলেন, বিস্ফোরণে ভবনটির ২৪টি কলামের মধ্যে সামনের ৯টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই ধ্বংসস্তূপ সরানো থেকে শুরু করে যেকোনো কার্যক্রম চালাতে গেলে ভবনটির ঝুঁকি কমাতে হবে। যাতে এটি ধসে না পড়ে। ঝুঁকিমুক্ত করার পর সেখানে প্রকৌশলগত পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করতে হবে। এরপরই বলা যাবে ভবনটি সংস্কার বা মজুবতকরণের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহার করা যাবে, নাকি ভেঙে ফেলতে হবে।

এদিকে, ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণের পরই উদ্ধারকাজে অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট। বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থল থেকে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার কাজ করেছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয়রাও উদ্ধারকাজে সহায়তা করেন।

এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দু’জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ভবন মালিক দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবে এবং অনুমতি ছাড়াই ওই ভবনের বেজমেন্টে স্যানিটারির শো-রুম ভাড়া দিয়েছেন। সেখানে ভেন্টিলেশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বেশ কিছু বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় এর আগে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে বুধবার রাতে রাজধানীর বংশাল থানায় মামলাটি দায়ের করে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট