নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে স্বামীর দায়ের করা প্রতারণা মামলায় স্ত্রী রূপালী আক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে তার মা রুবি বেগম ও বাবা শহিদুল্লার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আসামীদের বাড়ি সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের জিয়ানগর গ্রামে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ৬নং আমলি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নারায়ণগঞ্জ এ আদেশ জারি করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী শাকিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার বিরণে জানা গেছে, গত বছরের ৬ সেপ্টাম্বার নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেন মো: আল আমিন। আাদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য সোনারগাঁও থানাকে নির্দেশ দেন। তদন্তে মামলার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় ২৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) অভিযুক্ত রুপালী আক্তার, তার মা রুবি বেগম ও বাবা শহিদুল্লার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এ মামলায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ ফিরোজ আহমেদ প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে সত্য বলে উল্লেখ করেন।
পরোয়ানাকৃত শহিদুল্লা ও রুবি বেগম-ছবি সংগৃহিত
মামলার বিবরণে আরও প্রকাশ, ২০১৯ সালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের জিয়ানগর গ্রামের শহীদুল্লার মেয়ে রূপালী আক্তারের সাথে আল আমিনের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে রূপালী আক্তার তার বাবার বাড়িতে থাকেন। তার খরচের জন্য মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিতেন। হঠাৎ স্বামী আল আমিন জানতে পারেন তিনি বাড়িতে না থাকলে রুপালী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে একাধিবার বিচার-শালিস হয়। কিন্তু রূপালী আক্তার তার স্বভাবের পরিবর্তন করতে পারেননি।
মামলা আরও বলা হয়, এর আগেও রূপালী আক্তার আরও দুইটি বিয়ে করেন। তার এক স্বামীর নাম সোলেমান মিয়া ও আরেক জনের নাম লিটন মিয়া। তাদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাত করে সর্ম্পক বিচ্ছিন্ন করেন। তৃতীয় জনকে বিয়ে করার সময় আগের দুই স্বামীর পরিচয় গোপন রেখে বিয়ে করেন।
গত বছরের ৫ জুলাই বাদীর বাড়ি গিয়ে স্বর্ণালংকার, ল্যাপটপ ও নগদ টাকাসহ ২৩ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে রূপালী আক্তার পালিয়ে যায় কামরুল নামে এক ব্যক্তির সাথে। এরপর তার মোবাইল বন্ধ রাখে। পরে তাদের বাড়িতে গেলে উল্টো আল আমিনকে মিথ্যা মামলার হুমকি দেয়। এমনকি আল-আমিনকে বিভিন্নভাবে ফোন দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানায়, রূপালী আক্তার পূর্বের বিয়ে গোপন করে একাধিক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়। কিন্তু জানা ছিলো না সে বিয়ের আগে থেকেই পরকিয়ায় আশক্ত। তাকে অনেকবার সংশোধন হওয়া সুযোগ দেয়া হয়েছে কিন্তু হয়নি। তার পরিবারের লোকজনও তার এসব কর্মকান্ডে বাধা দেয়নি। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তাছাড়া রূপালীর বাবা শহিদুল্লাহ এক সময় শহরের টানবাজার পতিতা পল্লীর ম্যানেজার ছিলো। এমনকি তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়না জারি করা হয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
Leave a Reply