বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর মাকে একা বাড়িতে রেখে পরিবারের হাল ধরতে জীবিকার তাগিদে কাতার পাড়ি জমায় রেজুয়ানুল হক তুষার (২৫)। ছয়মাস আগে মোবাইলে পারিবারিকভাবে জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়ায় বিয়ে করেন তুষার। কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরে আনুষ্ঠানিকভাবে নববধূকে ঘরে তোলার কথা ছিল তার। তবে জীবিত অবস্থায় তুষারের দেশে ফেরা হলো না।
তুষার সোমবার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টার দিকে কাতারের দোহায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। নিহত হওয়ার ৯ দিন পর আজ বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বোডিং মাঠ এলাকায় নিজ বাড়িতে তুষারের মরদেহ এসে পৌঁছায়। সাত বছর পর ছেলের মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা আখিনুর আক্তার রেখা।
বাড়িতে তুষারের মরদেহ পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অ্যাম্বুলেন্স থেকে কফিন নামানোর পরই মা আখিনুর আক্তার সন্তানের মরদেহের কফিন জড়িয়ে ধরেন। একমাত্র বোন জুঁই তার ভাইয়ের মরদেহের ওপর কান্নায় লুটিয়ে পড়েন। এসময় সারা বাড়িজুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়।
পরে ট্যাংকের পাড় মাঠে বাদ আসর তুষারের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে শহরের শেরপুর মীর শাহাবুদ্দিন (রহ.) মাজার কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের মৃত হামিদুল হকের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রেজুয়ানুল হক তুষার ছোট। একমাত্র বোন জুঁইকে বিয়ে দিয়েছেন শহরের কান্দিপাড়ার জাপান প্রবাসী শাহনেওয়াজ ভূইয়া রাকিবের সঙ্গে। জুঁই স্বামী-সন্তানের সঙ্গে জাপানে থাকেন। বাবা হামিদুল হক পরিবার নিয়ে জেলা শহরের বোডিং মাঠ এলাকায় বাড়ি করে বসবাস করতেন। প্রায় আট বছর আগে তুষারের বাবা হামিদুল হক মারা যান।
তুষারের ভগ্নিপতি শাহনেওয়াজ ভূইয়া রাকিব বাংলা টাইমসকে জানান, কাতারের পুলিশ ঘাতক ট্রাকচালককে গ্রেফতার করেছে। তিনি একজন ভারতীয়। নিজেকে ‘মাতাল’ বলে দাবি করছেন।
Leave a Reply