জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) থিয়েটার এন্ড পারফমেন্স স্টাডিজ বিভাগে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্মাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির জন্য গত ৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন আদিবাসী কড়াদের প্রথম ছেলেটি। তার নাম লাপোল কড়া।গতকাল রাতে অনলাইনে প্রকাশিত ব্যবহারিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৫তম স্থান অর্জন করেছে বলে জানা যায়।
লাপোলের আগে কড়া সম্প্রদায়ের কেউ মাধ্যমিকের গণ্ডিও পেরোয়নি। নানা প্রতিকূলতার কারণে কড়া সম্প্রদায়ের মাত্র ২৪টি পরিবার এখনো বাংলাদেশে টিকে আছে। শ’খানেক মানুষের এই সম্প্রদায়টি অবশ্য ‘বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত ৫০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর’ একটি। অবহেলিত কড়া সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে উচ্চ শিক্ষার লড়াই চলছে লাপোলের।
ওই সম্প্রদায়দের একজন বিরল উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের রাঙ্গন গ্রামের রতন কড়ার ছেলে লাপোল কড়া। লাপোলই প্রথম গেল বছর এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লড়ছেন। ওই সম্প্রদায়ের ১০৪ জন সদস্যের মধ্যে বিরল লাপোল স্থানীয় রাঙ্গন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী, হালজায় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও বোর্ড হাট মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করেন।
লাপোল কড়া বলেন, ‘আমি এইচএসসি পাস করার আগ পর্যন্ত আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন কৃষ্ণ মামা। ভূমিদস্যুদের সঙ্গে লড়াই করে আমাদের গ্রামটাকে রক্ষা করতে গিয়ে দশম শ্রেণির চৌকাঠ পেরোতে পারেননি কৃষ্ণ মামা। কিন্তু তিনিই প্রেরণা হয়েছেন এগিয়ে যাওয়ার। কৃষ্ণ মামার অনুপ্রেরণায় প্রতিকূল অবস্থাকে উপেক্ষা করে প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে পড়ালেখার প্রতি মনযোগী হয়েছি। অনুধাবন করেছি- অবহেলিত, নির্যাতিত কড়া সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে শিক্ষা আর উচ্চশিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।’
থিয়েটার এন্ড পারফমেন্স স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো আল্-জাবির বলেন,লাপোল কড়া তার ব্যবহারিক পরীক্ষায় পারফরম্যান্সের মাধ্যমে আমাদের বিচারকদের মন জয় করেছেন।তিনি যদি ভর্তি হোন তাহলে সর্বাত্মক ভাবে সহযোগিতা করবো। কড়া সম্প্রদায় যেখানে বিলুপ্ততের পথে সেখানে লাপোল কড়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন কড়া সম্প্রদায় কে আগামীতে সাহস যোগাবে।ওর সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করছি।
Leave a Reply