চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য, মন মাতানো বাউল গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জয়পুরহাটে অনুষ্ঠিত হলো লোক সাংস্কৃতিক উৎসব। মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি…, বাংলার লোকায়ত সঙ্গীতের একটি অনন্য ধারা বাউল গান।
যা আবহমান বাংলার প্রকৃতি, মাটি আর মানুষের জীবন জিজ্ঞাসা এবং বাঙালির ঐক্য, শান্তি ও অসাম্প্রদায়িক সাধনার প্রতীক। বাংলার বাউল গান এখন বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্যের অংশ। জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সোমবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শুরু হয়ে রাত ১০টায় শেষ হয় লোক সাংস্কৃতিক উৎসব-২০২১।
‘মিলন হবে কত দিনে’ গানের সঙ্গে শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীদের দৃষ্টিনন্দন দলীয় নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে লোক সাংস্কৃতিক উৎসবের শুরু হয়। জেলা লোক গানের শিল্পীরা একে একে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য লোক সংগীত পরিবেশন দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলেন।
জেলার বিশিষ্ট লোক সংগীত শিল্পী হাশেম চিশতি ‘চাঁদের গাঁয়ে চাঁদ লেগেছে, আমরা ভেবে করবো কি’ সকলই কপালে করে এবং মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি,,, পরিবেশন করলে দর্শকরা আরো বেশি মুগ্ধ হয়ে পড়েন।
ডালিম কুমার পরিবেশন করেন তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো ছেড়ে দেব না…, মনে আমার বাবলা পাতার কশ লেগেছে যে কশ যায়না ধুলে সাবানে সাবানে…, শামিম আহমেদ পরিবেশন করেন বিনা কার্যে ধন উপার্জন…, নুর পরিবেশন করেন ‘মন আমার দেহ ঘড়ি সন্ধান করি কোন মিস্তরি বানাইছে.., আমার অন্তরায় আমার কলিজায়…, শান্তনা পরিবেশন করে বাউলা কে বানাইলো রে…, তনু পরিবেশন করে সোনার ময়না পাখি ঘরে থুইয়া বাইরে তালা লাগাইছে…, রবিন পরিবেশন করে মক্কা কি মদিনা খুজিলে মিলেনা…, ঐশি পরিবেশন করে ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’…,।
ইমরান ও শান্তনা যৌথভাবে পরিবেশন করেন ‘তোমায় প্রথম যে দিন জেনেছি মনে আপন ভেবেছি’।
লোক সাংস্কৃতিক উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ শরীফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা (পিপিএম), জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইশরাত ফারজানা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মন্ডল, এ্যাড. মোমিন আহমেদ চৌধুরী জিপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন, জয়পুরহাটের ঐতিহ্যবাহী লাইব্রেরী ও ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজা চৌধুরী, জেলা এনজিও সমন্বয় কমিটির সভাপতি নূরুল আমিন প্রমুখ।
লোক সাংস্কৃতিক উৎসব সমন্বয় করেন জেলা কালচারাল অফিসার মহাতাব উদ্দিন।
জেলার সরকারি, বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক সাধারণ দর্শক চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য বাউল গান উপভোগ করেন।
Leave a Reply