কুমিল্লার মন্ডপে কোরআন রাখা অভিযুক্ত ইকবাল গ্রেফতার হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) কক্সবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাকে ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন কখন মসজিদে যান এবং বের হন। এরপর মণ্ডপের দিকে যান এবং মণ্ডপ থেকে গদা হাতে ফেরেন তা।
সিসিটিভি’র ফুটেজ মসজিদের পাশের পুকুর পাড়ের একটি বাড়ির, মসজিদের একটি ও বাজার, ব্যাংক, সড়কের কয়েকটি স্পটের ফুটেজে ওই ব্যক্তিকে প্রথমে কোরআন হাতে এবং পরে গদা হাতে দেখা গেছে। এসব ফুটেজ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অ্যানালাইসিস করেছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ১২ অক্টোবর রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে মসজিদে প্রবেশ করতে দেখা যায় মাজারের খাদেম ফয়সাল ও হাফেজ হুমায়ুনকে। এরপর রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে মসজিদে প্রবেশ করেন ইকবাল। এসময় খাদেম ফয়সাল ও হাফেজ হুমায়ুন ইকবালের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায়। এরপর রাত ১১টায় তারা সেখান থেকে বেরিয়ে যান। রাত ২টা ১২ মিনিটের দিকে পুনরায় মসজিদে প্রবেশ করে কোরআন নিতে দেখা যায় ইকবালকে। এর দুই মিনিট পর মেঝেতে কোরআন রেখে তাকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। তারপর রাত ২টা ১৮ মিনিটে মসজিদে আবারও প্রবেশ করে মেঝেতে রাখা কোরআন নিয়ে মসজিদ থেকে বের হতে দেখা যায় তাকে। মসজিদ থেকে বের হয়ে তাকে মূল সড়কে উঠে মন্দিরের দিকে হেঁটে যেতে দেখা যায়।
অন্য একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ইকবাল পূজামণ্ডপের দিকে যাচ্ছেন। পূজামণ্ডপের রোড থেকে জগন্নাথ মন্দির রোডের দিকে এগিয়ে যান। এরপর তিনি জগন্নাথ মন্দির রোড থেকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক চকবাজার শাখার দিকে এগিয়ে যান। পূবালী ব্যাংক মোড়ের পাশের গলিতে প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে অবস্থান করে নৈশপ্রহরীদের সঙ্গে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কথা বলেন। সব সময় তার হাতে কোরআন দেখা যাচ্ছিল। কথাবার্তার পরে তাকে জগন্নাথ মন্দিরের দিকে যেতে দেখা যায়। সেই রোডে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর পূজামণ্ডপের দিকে এগিয়ে যান ইকবাল।
অপর একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ৩টা ১২ মিনিটে যুবকটির হাতে কোরআন শরিফ নেই। তিনি এসময় গদা কাঁধে নিয়ে মন্দিরের পাশে পুকুরপাড়ের রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করেন। এসময় তিনি চারপাশে তাকিয়ে দেখছিলেন কেউ তাকে দেখছে কি না।
চিহ্নিত ব্যক্তির প্রস্থানের একটু পরে রাত ৩টা ১৩ মিনিটের দিকে ৯৯৯ এ কল দেওয়া একরামকে সেখানে দেখা যায়। এরপর তাকে আবার ৩টা ২৩ মিনিটের দিকে দারোগাবাড়ি মসজিদে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এসময় তার কাছে কোরআন কিংবা গদা কিছুই দেখা যায়নি। এরপর ১৩ অক্টোবর পুকুরপাড়ে উত্তেজিত জনতার সামনে তাকে কথা বলতে দেখা যায়।
দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীর দিন গত বুধবার (১৩ অক্টোবর) ভোরে কুমিল্লা শহরের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন দেখা যায়। এরপর কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক।
Leave a Reply