মসজিদের চারিপাশে পানি থাকায় সাঁতারা কেটে মসজিদে যেয়ে ভাইরাল হয়েছিলেন হাওলাদার বাড়ির মসজিদের ইমাম হাফেজ মঈনুর রহমান। এর পর থেকে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর হাওলাদার বাড়ির বায়তুন নাজাত জামে মসজিদটি সবাই চেনেন।
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মসজিদটি খোলপেটুয়া নদীর ক্লোজারে বিলীন হয়ে গেছে। এর আগে ৫ অক্টোবর ভিডিও দেখে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাসিরউদ্দীন ওই এলাকায় ভাসমান মসজিদ তৈরী করে দিয়েছেন।
প্রতাপনগর গ্রামের মাসুম বিল্লাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর থেকে এই এলাকার মানুষ খুবই কষ্টে আছেন। মানুষের কী দু:খ কষ্ট সেটা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। নৌকা ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারে না। এর আগে চারিপাশে পানি থাকলেও হাওলদার বাড়ি জামে মসজিদটি টিকে ছিলো। নৌকায় করে যেয়ে মানুষ নামাজ আদায় করতো। কিন্তু আজ ভোর সাড়ে ৬টার দিয়ে মসজিদটি খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের তোড়ে বিলীন হয়ে গেছে। আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাসিরউদ্দীন ওই এলাকায় ভাসমান মসজিদ তৈরী করে দিয়েছেন সেখানেই নামাজ পড়তে হবে। এছাড়া তো উপায় নেই।
তিনি আরও বলেন, দিন দিন এই উপকূলীয় এলাকা বসবাসের যোগ্য থাকছে না। অনেক মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
প্রতাপনগর হাওলাদার বাড়ি বায়তুন নাজাত জামে মসজিদের ঈমাম হাফেজ মঈনুর রহমান বলেন, এর আগে মসজিদটি টিকে ছিলো নামাজ পড়তাম। আজ সকালে মসজিদটি বিকট শব্দে ভেঙে পড়েছে।আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের দেওয়া ভাসমান মসজিদেই নামাজ পড়তে হবে।
প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর ১০ মাস পানিতে ভেসেছিলো প্রতাপনগর। দুই মাস ভালো থাকার পর আবারো আঘাত হানে ঘূণিঝড় ইয়াস।সেই থেকে আজও আমার পুরো ইউনিয়নের মানুষ পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। নৌকা ছাড়া চলাচল করা যায়। পাশ্ববর্তী পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বন্যা তলা এলাকার বাঁধ ভেঙে এলাকার মধ্যে দিয়ে খাল হয়ে গেছে। অনেক মানুষের ঘরবাড়ি চলে গেছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলে গেছে। হাওয়ার বাড়ি এলাকার অনেক মানুষের ঘর বাড়ি, কবর ক্লোজারে (জোয়ের পানিতে সৃষ্ট খাল) চলে গেছে। এর মধ্যে টিকে ছিলো হাওয়াদার বাড়ি মসজিদটি।আজ সেটাও বিলিন হয়ে গেল। অতিদ্রুত কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়ায় টেকসই বাঁধ দিতে না পারলে দেশের মানচিত্র থেকে প্রতাপনগর ইউনিয়ন হারিয়ে যাবে।
Leave a Reply