1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Editor :
ডিম বিক্রির টাকা 'এহসানে' রাখেন রহিমা বেগম - বাংলা টাইমস
বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন

ডিম বিক্রির টাকা ‘এহসানে’ রাখেন রহিমা বেগম

বিশেষ প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২৫১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

আ: রাজ্জাকের বাড়ী পিরোজপুর শহরের পি টি আই এলাকায় । পেশায় তিনি দিনমজুর। শ্রম আর ঘাম ঝড়িয়ে আয় করা টাকা জমা রেখেছিলেন এহসানে। তিনিও এহসান থেকে প্রতারিত।

 

আলাপকালে রাজ্জাক বলেন, এহসানের কার্যক্রম সুদমুক্ত এ কথা যেনে এহসানে টাকা রেখেছিলাম ৫০ হাজার আর আমার বাবা রেখেছিলেন ১ লাখ। পিরোজপুরে এহসানের কার্যক্রম শুরু থেকেই আমরা টাকা রেখেছিলাম।

 

তিনি বলেন, আমার মা রহিমা বেগম বাড়ীতে বসে ১৫ থেকে ২০টা দেশী মুরগী পালতেন। এ মুরগীতে যে ডিম দিত মা আমার সে ডিম বিক্রি করে টাকা জমাতেন। এ জমানো প্রায় ৫০ হাজার টাকা এহসানের ডিপিএস পদ্ধতি ও এক কালীন পদ্ধতিতে রেখেছিলেন। মেয়াদ শেষ হবার পর সে টাকা ভাঙিয়ে আবার এক কালীন পদ্ধতিতে রেখেছিলেন। যা বর্তমানে দাড়িয়েছে ১ লাখে। রাজ্জাকের ভাষ্য এহসানের কাছে তাদের পাওনা ৫ লাখ।

 

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা, মা ও অপর দু ভাইয়ের টাকা জমা আছে এহসানে। আমরা এ টাকা ফেরৎ পাওয়ার জন্য প্রশাসনের সাহায্য কামনা করছি।

 

এমএলএম কোম্পানী এহসানে টাকা রেখে প্রতারিত হন মো. ইয়াহ হিয়া ওরফে রাব্বী। তার বাড়ী পিরোজপুর পৌরসভার ছোট খলিশাখালী এলাকায়। ২০১২ সাল থেকে এহসানের বিভিন্ন প্রকল্পে (মাসিক সঞ্চয়, বাৎসরিক সঞ্চয়, এক কালীয় সঞ্চয়) ৫ লাখ টাকা রাখেন তিনি। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর লভ্যাংশ সহ টাকা চাইতে গিয়ে কপালে জুটেছে মার।

 

হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে এখন তিনি সুস্থ। তবে তার শরীরে এখনও মারের ধকল রয়েছে। ইমামতি, প্রাইভেট পড়ানো ও মাদ্রসায় ব্যাচ পড়িয়ে যে আয় হয়েছে তা তিনি এহসানে রেখেছেন। এখন তিনি শূন্য হাতে।

 

মো. ইয়াহ হিয়া ওরফে রাব্বী বলেন, প্রথম অবস্থায় আমি মাদ্রাসায় পড়া অবস্থায় প্রাইভেট পড়িয়েছি, পিরোজপুর শহরতলীর কুমারখালী মসজিদে ইমামতি করেছি। এরপর আমি পড়াশুনা শেষ করে সদর উপজেলার চলপুখরিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাকতা করেছি। এসব থেকে আমি সব মিলিয়ে প্রতিমাসে ১০ হাজার ১৫ হাজার আবার কখনো ১৭ হাজার টাকার মতো পেতাম। যে টাকা আমি এহসানে রেখেছি।

 

তিনি বলেন, ইমামতি করিয়ে ৩ হাজার, ৮শ থেকে ১ হাজার করে ৬ জন ছাত্র পড়াতাম। আর মাদ্রাসায় ব্যাচ পরিয়ে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা পেতাম।

 

তিনি আরও বলেন, এহসানের এমডি রাগীব আহসান ও তার শ^শুর পিরোজপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা শাহ আলম আমাদেরকে বলেছে এহসান এর কার্যক্রম শরিয়া মোতাবেক। এখানে সুদের কোনো কারবার নাই। আমি তাদের কথা বিশ^াস করে এহসানে টাকা জমা রেখেছি। আমার কথামত খলিশাখালী এলাকার মানিক নামে এক পানের বরজ ব্যবসায়ী দেড় লাখ টাকা রেখেছে।

 

রাব্বী বলেন, বাৎসরিক প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা রেখেছিলাম তা থেকে শুধু প্রতিমাসে ৫শ ৬ টাকা করে পেয়েছি। কষ্টের টাকা এহসানে রেখে আজ আমি প্রতারিত। আমাকে মারও খেতে হল রাগীব ও তার ভাইদের হাতে। জমাকরা টাকা ফেরৎ পাবো কিনা তা এখন অনিশ্চিত।

 

তিনি বলেন, এহসানে জমা রাখা টাকার মেয়াদ শেষ হবার পর করোনার প্রথম ঢেউয়ের আগে থেকে আমি আমার জমানো টাকা লভ্যাংশ ফেরৎ চাই। এরপর তারা তালবাহানা করতে থাকে। আমি আমার টাকার জন্য এহসানের নির্ধারিত ফরম ১শ টাকা দিয়ে নিয়ে আবেদন করলে তিন মাস পর যেতে বলেন। আমি ৩ মাস পরে গেলে আবার নতুন করে আবেদন করতে বলে।

 

মো. ইয়াহ হিয়া ওরফে রাব্বী বলেন, যত বারই আমি টাকার জন্য আবেদন করেছি ততবারই ফরমের জন্য নতুন করে টাকা দিতে হয়েছে। কিন্তুু এহসানে আমার জমা রাখা টাকা আর পাইনি। গেল ৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এহসান এমডি রাগীব আহসান আমাকে ফোন করে বলে আস তোমার সাথে টাকা দেয়ার বিষয়ে কথা আছে। আমি যখন খলিশাখালী মাদ্রাসায় পড়েছি রাগীব আহসান তখন সেখানের শিক্ষক। আমি সরল বিশ্বােসে সেদিন দুপুর সারে ১২টার দিকে নূর ই মদিনার গেটে গিয়ে রাগীব আহসানকে মোবাইলে মেসেজ পাঠাই। তাতে লিখি স্যার আজকে টাকা দিবেন না হলে চলে যাই। একটুপর গেটের দাড়োয়ান কবির গেট খুলে দেয়। আমি গেটের ভিতরে গেলে রাগীব আহসান আমাকে একটা গালি দিয়ে বলে ধরনা ওরে। তখন আমি দৌড়ে গেটের বাহিরে যেতে গেলে দাড়োয়ান কবির থাবা দিয়ে আমাকে ধরে ফেলে। আর রাগীব ও দাড়োয়ান কবির মিলে আমাকে মারতে থাকে।

 

রাব্বী বলেন, মার খেয়ে আমি বাঁচান বাঁচান বলে চিৎকার শুরু করলে আমার গলা ধরে নূর ই মদিনার ভবনের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার পর রাগীব আহসানের ভাই আবুল বাসার ও শামীম এসে আমাকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। এতে আমি অনেক অসুস্থ হয়ে এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ি। তাদের মারধরে আমার গায়ের জামা ছিড়ে যায়।

 

কিছু সময় পর আমার জ্ঞান ফিরলে তারা আমার ছেড়া জামা পাল্টিয়ে অন্য এক ছাত্রের পাঞ্জাবী পরিয়ে দুজনে ধরে আমাকে গেটের বাহিরে ফেলে রেখে যায়। এরপর আমি আমার বাবাকে ফোন দিলে আমার বাবা সেখান থেকে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। মারধরের বিষয়ে মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাগীর ও তার সহযোগীরা আমাকে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিয়েছে। বর্তমানে আমি চরম নীরপত্তাহীনতার ভূগছি।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট