চাঁদপুর শহরের বিপনীভাগ বাজার এলাকা থেকে নারায়ণ ঘােষ (৬০) নামের এক ব্যবসায়ীর বস্তাবন্দী গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টায় বিপনীবাগ বাজারের মেসার্স শরীফ স্টীল ওয়ার্কসপের কারখানার পাশ থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলের পাশের একটি সেলুন থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ ও পিবিআইর সদস্যরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়।
নিহত নারায়ন ঘোষ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের নতুনবাজার ঘােষপাড়ার বাসিন্দা মৃত যোগলকৃষ্ণা ঘোষের পুত্র। দাম্পত্যজীবনে তিনি ২ পুত্র ও ১ কন্যা সস্তানের জনক। তিনি পাইকারিতে দধি মিস্টি বিক্রি করতেন।
নিহতের ছোট ছেলে রাজু ঘোষ ও ফুফাতো ভাই চন্দ্রনাথ ঘোষ চন্দ্র জানান, নারায়ন ঘোষ বহুকাল ধরে পাইকারিতে দদি, মিস্টি বিক্রি করছেন। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি টাকা কালেকশন করতে বাজারে যান। এরপর আর বাড়ি ফিরে নাই। সকালে তার বস্তাবন্দী লাশের খবর পাওয়া যায়।
ঘটনার রাতে তার সাথে বাজার থেকে কালেকশন করা টাকা এবং হাতে একটি স্বর্ণের আংটি ছিলো। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি কৃষ্ণ কর্মকারের সেলুনে সেভ করেন।
বিপনীভাগ বাজারের নাইট গার্ড মো. ইসমাইল বকাউল জানান, রাত ২টায় কৃষ্ণ কর্মকারের সেলুনের কর্মচারি রাজু শীল দোকান খুলে একটি বস্তা নিয়ে পুনরায় দেকানে প্রবেশ করে।আমি দূর থেকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, সামনে পূজা তাই দোকান পরিস্কার করছে। কিছুক্ষণ পর সে বস্তাটি টেনেহিঁচড়ে পাবলিক টয়লেটের কাছে নিয়ে যায়। এবারও তাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, দোকানের ময়লা-আবর্জনা পাবলিক টয়লেটের কাছর ফেলেছেন। এরপর রাজু শীল ভোর ৪টায় সেলুন বন্ধ করে বেরিয়ে যায়।
জানা যায়, চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার এলাকার ঘােষপাড়ার বাসিন্দা নারায়ণ ঘােষ (৬০)কে হত্যা করে লাশ বস্তা করে বিপনীবাগ বাজারের পাবলিক টয়লেটের
কাছে ফেলে রেখে যায়।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায় বাংলা টাইমসকে জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছি। প্রত্যক্ষদর্শী নাইটগাট এবং পরিবারের বক্তব্য নিয়েছি। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে অভিযুক্তকে আটক করা হবে।
তিনি আরো বলেন, এই ঘটনার সাথে অন্য কোন বিষয় জড়িত আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানান তিনি।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আসিফ মহিউদ্দিন, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রশিদসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, নিহত নারায়ন ঘোষ মিষ্টান্ন ব্যবসার পাশাপাশি সুদের ব্যবসা করতেন। তিনি বিপনীভাগ বাজারের অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছে সুদে টাকা বিনিয়োগ করেছেন।
ঘটনার পর থেকে কৃষ্ণ কর্মকারের সেলুনের কর্মচারীরা রাজু শীল পলাতক রয়েছে।
Leave a Reply