রাজ্যের হাই-প্রোফাইল কেন্দ্র ভবানীপুর। বিধানসভা উপনির্বাচনে লড়াই জমে উঠেছে দক্ষিণ কলকাতার এই আসনে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিকে। আর অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির এই লড়াই এই মুহূর্তে পুজোর আবহে অন্যতম বড় চমক হয়ে উঠেছে। ভবানীপুর কেন্দ্রে বেকারত্ব ইস্যুকে সামনে রেখে প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। আর এর পাল্টা জবাব দিতে প্রচারে শান দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস, যেখানে তারা ইস্যু করছে বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের রিপোর্ট।
দেশে কর্মসংস্থান মোদীর সময়েই নষ্ট হয়েছে এই ইস্যুতে শান দিতে বলা হয়েছে প্রচারকদের। দলের শীর্ষ নেতারা প্রচারে এই দিকগুলি তুলে ধরবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকলে বেকারত্ব আরও বাড়বে বলে প্রচারে তুলে আনছে তৃণমূল। বিশেষ করে ৭০,৭৩,৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে এই ইস্যুতে চলবে প্রচার।
ইস্যু ১ ব্যাঙ্ক-বিমা সংস্থা বিক্রি। এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস হাতিয়ার করছে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজনের একটি রিপোর্টকে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে। দেশী শিল্পপতি বা বিদেশি কোম্পানির কাছে ব্যাঙ্ক, বিমা বিক্রি করা হলে তা হবে দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিপর্যয়কর ভুল পদক্ষেপ।একই সাথে এত বড় দেশে রাজ্যের হাতে আরও ক্ষমতা দিতে হবে। নাহলে দেশের প্রত্যাশিত অগ্রগতি হবে না। রাজ্যগুলি আর্থিক ভাবে সমৃদ্ধ হলে তবেই দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা মজবুত হবে।
ইস্যু ২- স্নাতকদের বেকারত্ব বিজেপির কারণে। এক্ষেত্রে অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর রিপোর্ট সামনে আনছে তৃণমূল। যেখানে বলা হচ্ছে ২০১৭ সালে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী স্নাতকদের মধ্যে বেকার ছিল ৪২ শতাংশ। ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫.০১ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা গিয়ে পৌছয় ৬৩.০৪ শতাংশ। তৃণমূলের বক্তব্য তা এখন ৮০ শতাংশ হয়ে গেছে। আগামী দু’বছরে তা ১০০ শতাংশ হয়ে যাবে বলে তোপ তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের। এর পাশাপাশি রাজ্যের অর্থ মন্ত্রী অমিত মিত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী। সামগ্রিক ভাবে দেখলে দেখা যাবে, গত মাসে বেকারত্বের হার ছিল ৮.২৩%। অর্থাৎ দেশে ৩.৬ কোটি মানুষের হাতে কাজ নেই। কারখানার কর্মীরা কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরছেন দলে দলে৷ মানুষের আয় ও ক্রয় ক্ষমতা কমেই চলেছে৷ কেনাকাটা কমেছে ১২ শতাংশ। ছোট ও মাঝারি ব্যবসা ধুঁকছে। ছোট ব্যবসায়ীদের কপালে হাত। জিনিষের দামে আগুন। গরীব মানুষ কাঁদছে।
তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের বক্তব্য, এই ভয়ঙ্কর অবস্থায় মানুষের হাতে যখন নগদ টাকা জোগানের দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের, তখন প্রধানমন্ত্রীর জন্যে কেনা হচ্ছে বিলাসবহুল বিমান। উপ রাষ্ট্রপতির জন্যে ১৯০ কোটি টাকা খরচ করে প্রাসাদ বানানো হচ্ছে। দিল্লির বুকে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সেন্ট্রাল ভিস্তা বানানো হচ্ছে। এই জনবিরোধী প্রকল্পের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস উপনির্বাচনে মানুষের কাছে যাবে। তারপরেও মানুষের কাছে এই সমস্ত তুলে ধরা হবে।
Leave a Reply