মুন্সিগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনা নদীতে “এমভি ইমাম হাসান-৫” নামের লঞ্চ থেকে ৪ শিশুকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগের ঘটনায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের হয়েছে। রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর নৌপুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো. লুৎফর রহমান বাদী হয়েছে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক জানান, চার শিশুকে পানিতে ফেলে হত্যার চেষ্টার মামলা হয়েছে। মামলা তদন্ত করবে নৌপুলিশ।
মামলা এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়, শনিবার (১১আগষ্ট) সকালে স্পিডবোটে মেঘনা নদী দিয়ে গজারিয়া থেকে মুন্সিগঞ্জ সরকারি যাচ্ছিলেন গজারিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রইছ উদ্দিন। পথে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে অনুমান ১কি.মি দূরে মেঘনা নদীতে শাকিব (১২) ও মোঃ মেহেদুর হাসান(১৩) নামের দুই শিশুকে নদীতে ভাসতে দেখে স্পীডবোট থামিয়ে নদী থেকে উদ্ধার করেন তিনি।
এসময় শিশুরা জানায় , তারা সদরঘাট থেকে চাঁদপুর যাওয়ার জন্য “ইমাম হাসান-৫” লঞ্চে পানি বিক্রির জন্য উঠে। কিন্তু তাদের কাছে ভাড়ার টাকা না থাকায় উক্ত লঞ্চের স্টাফরা তাদেরকে মাঝ নদীতে ফেলে দেয়েছে। তাদের নিয়ে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে পৌছালে দুই শিশুর সাথে থাকা অপর অপর দুই বন্ধু সিয়াম(১৩) ও তরিকুল (১০) পায়। পরে শিশুদের আত্বী-স্বজনদের সাথে কথা বলে ঢাকা-সদরঘাটগামী “এমভি আল-বোরাক” নামের অপর আরেকটি লঞ্চে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
এজহারে আরো উল্লেখ্য করা হয়, “এমভি ইমাম হোসেন-৫” লঞ্চের অজ্ঞাত স্টাফগত ৪শিশুদের হত্যার উদ্দ্যোশ্যে ধাক্কা দিয়া মেঘনা নদীর মাঝখানে ফেলে দেয়ায় ৩০৭/৩৪ধারায় অপরাধ করিয়াছে।
এদিকে শিশু দুটি উদ্ধারের পর শিশু দুটির সাথে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রইছ উদ্দিনের একটি কথোপকথনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শনিবার রাত ১০টার দিকে গজারিয়া থানার ফেইসবুক পেজে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে দেখাযায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করছে দুই শিশু।
এবিষয় জানতে চাইলে লঞ্চ থেকে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ইমাম হাসান-৫ লঞ্চের মাস্টার দেলোয়ার হোসেন। তিনি জানান, শিশুদের ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। হয়তো মুন্সিগঞ্জে নদীতে ট্রলারে যাত্রী নামানোর সময় ওরা ট্রলারে নামতে পারেনি তাই নিজেরাই লাফ দিয়েছিলো। পরে যাত্রীরা আমাদের বলে যে লঞ্চের পেছন থেকে ৩টা বাচ্চা পানিতে লাফ দিছে। যদি আমরা লঞ্চ থেকে ফেলে দিতাম লঞ্চের যাত্রীরা অবশ্যই আমাদের ধরতো। আজ (রবিবার) সকালে ওদের আবার সদরঘাট টার্মিনালে দেখলাম শুয়ে আছে।
Leave a Reply