1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Editor :
কবর থে‌কে শ্মশানে শান্তর মরদেহ! - বাংলা টাইমস
বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

কবর থে‌কে শ্মশানে শান্তর মরদেহ!

শে‌রপুর প্রতি‌নি‌ধি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৭৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনের রেললাইনের পাশ থেকে শান্ত চক্রবর্তী (৪৫) নামে শেরপুরের এক হিন্দু ব্যক্তির মর‌দেহ উদ্ধার করে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন এবং শনাক্তের তিনদিন পর অবশেষে কবর থেকে উত্তোলন করে নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

শ‌নিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে জামালপুর পৌর কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের উপস্থিতিতে ওই মর‌দেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে দুপুরে মর‌দেহ শেরপুরে নিয়ে আসার পর স্থানীয় শেরীশ্মশানে তার সৎকার করা হয়।

 

জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু শনিবার দুপুরে বলেন, মৃত ব্যক্তির ছেলের আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই মর‌দেহ উত্তোলন সাপেক্ষে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডিএনএ’র প্রশ্নে জটিলতা সৃষ্টি হলেও যেহেতু পরিবার তা শনাক্ত করেছে, সেহেতু পরবর্তীতে রেলওয়ে পুলিশের অনাপত্তির প্রেক্ষিতে সেই জটিলতা নিরসন করে শুক্রবার ফের অনুমোদন দেওয়া হয়। আর সেই অনুমোদনের প্রেক্ষিতে শনিবার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তা উত্তোলন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

নিহতের পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, শান্ত চক্রবর্তী শেরপুর শহরের গৃর্দানারায়ণপুর মহল্লার প্রয়াত সমর চক্রবর্তীর ছেলে ও এক সন্তানের জনক। তিনি দীর্ঘদিন জামালপুর শহরের রেলগেইট এলাকাস্থ লিলি মটরস নামে একটি মোটরসাইকেল বিক্রির শোরুমে ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করেছেন। প্রায় ৬ মাস আগে শো-রুমটি বন্ধ হয়ে যাবার পর থেকে তিনি নিজ বাড়িতেই বেকার জীবনযাপন করছিলেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শান্ত বাসা থেকে বের হলেও রাতে আর বাসায় ফেরেননি। পরে শান্তর স্ত্রী রূপা চক্রবর্তী তার আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরও না পাওয়ায় তার নিখোঁজের বিষয়ে বুধবার সকালে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন। পরে একইদিন বিকেলে জামালপুরে রেললাইনের পাশে এক ব্যক্তির মর‌দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে শান্তর স্বজনরা রেলওয়ে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে জামালপুর যায় এবং মর‌দে‌হের ছবি দেখে তা শান্ত চক্রবর্তীর বলে শনাক্ত করেন। কিন্তু ততক্ষণে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে তার মর‌দেহ‌টি স্থানীয় আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে স্থানীয় পৌর কবরস্থানে দাফন করে ফেলে রেলওয়ে পুলিশ।

 

পরে শান্ত চক্রবর্তীর পুত্র স্বরূপ চক্রবর্তীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার মর‌দেহ উত্তোলন করে সৎকারের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেন। কিন্তু স্থানীয় রেলওয়ে পুলিশের তরফ থেকে ডিএনএ টেস্ট ছাড়া ওই মর‌দেহ উত্তোলন ও হস্তান্তর না করার দাবি উঠলে নতুন করে ঝামেলা সৃষ্টি হয়।

 

এদিকে ঘটনার বিষয়ে জামালপুর রেলওয়ে পুলিশের এসআই সোহেল রানা বলেন, বুধবার ভোর ৪টার দিকে মাথায় রক্তাক্ত অচেতন অবস্থায় এক ব্যক্তিকে রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মের ৩শ গজ পূর্বদিকের রেললাইনের পাশে পাওয়া যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল ৭টার দিকে মারা যায়। তার দাবি, পরিচয় না পাওয়ায় প্রয়োজনীয় কার্যাদি সেরে মুসলিম ভেবে দাফনের জন্য আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে মর‌দেহ হস্তান্তর করা হয়। ঢাকাগামী কোন ট্রেনের ধাক্কায় তিনি আঘাত পেয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

অন্যদিকে শান্ত চক্রবর্তীর ছেলে স্বরূপ চক্রবর্তী অভিযোগ করে বলেন, রেললাইনের পাশে তার বাবার মৃত্যুটি রহস্যজনক। ট্রেনের সাথে ধাক্কায় তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন- জিআরপি পুলিশ এমন দাবি করলেও স্থানীয়রা কেউই এ ঘটনা শুনেননি। তার ধারণা, পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাতের পর প্রাণ হারিয়েছে আশঙ্কায় তাকে রেললাইনের পাশে ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা।

 

শান্তর ভাই রাজু ও রতন চক্রবর্তী বলেন, একজন হিন্দু ব্যক্তির মর‌দেহ শনাক্তের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ না দিয়ে এবং তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করে বেওয়ারিশ হিসেবে কবরস্থানে দ্রুত দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুরতহাল ও গোসল করানোর সময়ও কি তারা কিছুই খেয়াল করেননি?

 

এ ব্যাপারে জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য বলেন, একজন ব্রাহ্মণ হিন্দুকে শনাক্ত করা কঠিন কিছু নয়। তার গলায় পৈতা ছিল। এছাড়া হিন্দু হিসেবে তো তার খৎনা করানোও ছিল না। সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ও গোসলের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের তা অবশ্যই দেখার কথা। কিভাবে তাহলে তাকে মুসলমান হিসেবে দাফন করা হলো? রেলওয়ে পুলিশের তাড়াহুড়া করে মর‌দেহ দাফনের বিষয়টি সন্দেহজনক।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট