মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মানসিক সমস্যা। এ কারণে বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। গত ১৫ মাসে দেশে ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) ‘আঁচল ফাউন্ডেশন’ এসব তথ্য প্রকাশ করে। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে পড়াশোনার চাপ, বেকার সমস্যা, বৈবাহিক সমস্যা, প্রেমে ব্যর্থতা, মানসিক নির্যাতন, পারিবারিক সমস্যা, অবসাদ ও বিষন্নতাকেই প্রধানত চিহ্নিত করা হয়। সংগঠনের জরিপে এসব তথ্য উঠে আসে।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) ছিল বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘কাজের মাধ্যমে প্রত্যাশা বৃদ্ধি’। দিবসটি উপলক্ষে ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও করণীয়’ শীর্ষক কাউন্সেলিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের সহকারি পরিচালক (মনোবিজ্ঞানী) ইফরাত জাহান আত্মহত্যার কারণ ও প্রতিকারসহ বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন।
তথ্য মতে, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ হতে ২০২১ সালের ৪ জুন পর্যন্ত দেশে ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে ৭৩ জন স্কুল শিক্ষার্থী, ৪২ জন বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী, ২৭ জন কলেজ শিক্ষার্থী ও ২৯ জন মাদরাসার শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের বেশিরভাগের বয়স ১২ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। এই সংখ্যা ২০১৮ সালে ১১ জন এবং ২০১৭ সালে ১৯ জন ছিলো।
জরিপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যানেেদেখা গেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দশ বছরে ১১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। যার মধ্যে ৬ জন ছাত্রী ও ৫ জন ছাত্র। এদের মধ্যে ২০১০ সালে ২ জন, ২০১১ সালে ২ জন, ২০১২ সালে ২ জন, ২০১৫ সালে ১ জন, ২০১৭ সালে ১ জন, ২০১৯ সালে ২ জন ও ২০২০ সালে ১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। এই ১১ জনের মধ্যে ৬ জন অবিবাহিত, ৪ জন বিবাহিত ও একজন তালাকপ্রাপ্ত ছিলেন। এদের মধ্যে প্রথম বর্ষের ১ জন, তৃতীয় বর্ষের ২ জন, চতুর্থ বর্ষে ১ জন, স্নাতকোত্তরের ৩ জন এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ৩ জন শিক্ষার্থী ছিলেন।
জরিপে আরও দেখা যায়, ৩ জন ক্যাম্পাসে, ২ জন স্বামীর বাসায়, ৩ জন মেসে এবং ৩ জন বাড়ির বাইরে আত্মহত্যা করেন। যার মধ্যে ৭ জন গলায় ফাঁস দিয়ে, ২ জন উঁচুস্থান থেকে লাফিয়ে, ১ জন বিষ খেয়ে এবং ১ জন পানিতে ডুবে আত্মহত্যা করেন।
জরিপের বিষয়ে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের সহকারি পরিচালক (মনোবিজ্ঞানী) ইফরাত জাহান বলেন, প্রতি বছর ৭ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। এর মধ্যে ৭৭ শতাংশ ঘটনা মধ্যম আয়ের দেশে সংগঠিত হয়।
Leave a Reply