জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার নিভৃত পল্লী কানাইপুকুর গ্রামে বাসা বেঁধেছে বিরল প্রজাতির প্রায় ২০ হাজারের ও অধিক শামুক খোল পাখি। গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সোবহানের বাড়ির পুকুর পাড়ের চারপাশের গাছে ঠাঁই নিয়েছে পাখিগুলো। এ দিকে গ্রামবাসীরা ও গভীর মমত্ব দিয়ে আগলে রেখেছে পাখিদের।
নিরাপদ আশ্রয়, আর মানুষের ভালোবাসায় এই গ্রামে পাখির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। জেলার মধ্যে ওই গ্রামটি এখন পাখির গ্রাম বলে ও পরিচিত লাভ করেছে।
কানাইপুকুর গ্রামের আব্দুস সোবহান বলেন, আমাদের এখানকার গাছে গাছে বাসা বেঁধেছে হাজার হাজার শামুক খোল পাখি। পুকুর পাড়ের বড় বড় গাছে বাসা বেঁধে প্রায় দেড় যুগ ধরে বাস এসব পাখি।
তিনি আর ও বলেন, এলাকার মানুষের কাছে শামুক খোল পাখি শামুক ভাঙ্গা, হাইতোলা মুখ- এসব নামে ও পরিচিত। খাল-বিলের ছোট ছোট শামুক-ঝিনুক, ছোট মাছ আর ফসলের মাঠের পোকা-মাকড় খেয়ে জীবন বাঁচায় শামুক খোল পাখি। আমাদের নিরাপদ আশ্রয়ে প্রজনন ও করেছে পাখিগুলো। ফলে দিন দিন বাড়ছে পাখির সংখ্যা। আমরা গোটা গ্রামের মানুষ নিরাপত্তা দিয়ে আগলে রেখেছি এসব পাখিদের।
এ দিকে, জয়পুরহাট থেকে আসা দর্শনার্থী সাগর সরকার , পলাশ , শফিকুল ইসলাম আলম ,আনিছুর রহমান বিটন বলেন, পাখিগুলো দেখে আমার ভালো লেগেছে, বিশেষ করে এই মানুষদের অভিনন্দন যে তারা সকলেই মিলে এসব পাখিদের আগলে রেখেছে। তারা কখনোই পাখিদের সাথে খারাপ আচরণ করেন না। অন্যদিকে কেউ পাখি শিকার করতে এলে তারা বাধা দেয়। এটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
সবুজ আন্দোলনের জয়পুরহাট জেলা শাখার সমন্বয়কারী তাহরিম আল হাসান রাশেদ বলেন, পাখিরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। এগুলো আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। আর তার জন্যই পাখি কলোনিগুলোর সংরক্ষণ করা দরকার বলে ও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান বাংলা টাইমসকে বলেন, গ্রামবাসীদের সম্পৃক্ত করে পাখিদের অবৈধ স্বীকার বন্ধে সম্মিলিত উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। অন্যদিকে সব ধরনের রোগ-বালাই সহ পাখিদের কিছু হলেই তার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য এলাকার অনেকের কাছে জায়গাটি কানাইপুকুর-পাখিগ্রাম হিসেবে পরিচিত। আবার কেউ কেউ বলেন পাখি কলোনি। তবে যে নামেই ডাকা হোক ছোট-বড় সব বয়সী মানুষ কানাইপুকুর ছুটে আসেন পাখি দেখতে। এখানে প্রতিনিয়তই ভিড় করছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীরা। গ্রামবাসীর পাশাপাশি কানাইপুকুর গ্রামে পাখির অভয়ারণ্য গড়তে প্রশাসন আর ও বেশী আন্তরিক হবে এমনটাই প্রত্যাশা গ্রামবাসীর।
Leave a Reply