মহামারির করোনা সংক্রমণের কারণে ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর খুলছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। এ দিন থেকে সারাদেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক-সহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসেবে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। জীবানুমুক্ত করণের পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে সব রকম স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা।
তবে আগের মতো নয়, নির্দিষ্ট আসন সংখ্যার অর্ধেক শিক্ষার্থী নিয়ে চলবে ক্লাস। বন্যার কারনে দেশের বেশ কয়েকটি এলাকার স্কুল এখনও পানির নিচে। তাই এ সময়ে খুলছে না তাদের স্কুল। অনিশ্চয়তায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মল আনন্দ থেকে বঞ্চিত হতে পারে কুড়িগ্রাম, বগুড়াসহ দেশের বন্যা আর নদী ভাঙ্গনের কবলীত অঞ্চলের হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী। চলতি বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতায় বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ কুড়িগ্রামে ৪ উপজেলার ৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। আর ভাঙ্গনের হুমকিতে আরো ১৬ প্রতিষ্ঠান।
একই অবস্থা বগুড়ার সারিয়াকান্দিতেও। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যালয় খুলবে এমন খবরে শিক্ষাক-শিক্ষার্থী আর অভিভাবতদের মাঝে উচ্ছ্বাস থাকলেও পাঠদান কার্যক্রম অনিশ্চিত। বিদ্যালয়ের মাঠসহ বন্যার পানিতে উপজেলার ২টি মাধ্যমিক ও ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো পানি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর রুটিন প্রণয়নে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (বেসরকারি কলেজ শাখা)। বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) এসব নির্দেশনা জারি করা হয়।
নির্দেশনাবলীতে বলা হয়েছে-
১. ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে।
২. প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন প্রতিষ্ঠানে আসবে।
৩. সপ্তাহে প্রতিদিন নির্দিষ্ট শ্রেণিতে দুটি করে ক্লাস ধরে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রুটিন প্রণয়ন করবে।
৪. রুটিনের সাথে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহারিক ক্লাসসমূহ নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫. যেসকল প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর সংযুক্ত সেকল প্রতিষ্ঠান ওই সকল স্তরের জন্য নির্ধারিত ক্লাসসমূহ সমন্বয় করে রুটিন প্রণয়ণ করবে।
৬. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ চলমান ডিগ্রি, সমমান ও মাস্টার্স পরীক্ষার সাথে সমন্বয় সাপেক্ষে ২০২১ ও ২০২২ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য রুটিন প্রণয়ন করে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
৭. রুটিন প্রণয়নের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ/প্রস্থান/অবস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের মতো কোনও বিষয় না ঘটে।
৮. রুটিন এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে যেন ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে এবং প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়।
৯. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপাতত এসেম্বলি বন্ধ থাকবে।
১০. প্রতিদিন নির্ধারিত চেকলিস্ট অনুযায়ী তথ্য প্রেরণ করতে হবে।
১১. পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে উপর্যুক্ত বিষয়সমূহ অনুসরণ করতে হবে।
Leave a Reply