যমুনার পানি কমলে ও পদ্মাট পানি বৃদ্ধির হার অব্যাহত রয়েছে। পদ্মার পানি রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নদীতে স্রোত দেখা দিয়াছে। তীব্র স্রোতে দেশের ব্যস্ততম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকারী ফেরিগুলো স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না।
অপরদিকে, অপর নৌরুট বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ওই রুটে চলাচলকারী যানবাহনগুলোও নদী পারাপারের জন্য দৌলতদিয়ায় আসছে। ফলে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে দৌলতদিয়া ঘাট অভিমুখে আটকে পড়েছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক।
রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর), দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের সারি ছোট রাখতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকে রাখা হচ্ছে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড় এলাকায়। সেখানেও পণ্যবাহী ট্রাকের অন্তত ৩-৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়েছে। ২-৩ দিন আগে এসেও অনেক ট্রাককে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য অবৈধ সুবিধা নিয়ে পেছনের অনেক ট্রাককে আগে পারাপারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
যশোর থেকে ঢাকাগামী মালবাহী ট্রাকচালক রব মিয়া জানান, তিনি দু’দিন গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় আটকে থেকে আজ ভোরে দৌলতদিয়ায় এসে সিরিয়ালে আটকে পড়েছেন। কবে ফেরির নাগাল পাবেন তা বলতে পারছেন না।
খুলনা থেকে ঢাকাগামী কাভার্ডভ্যান চালক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গত মঙ্গলবার তিনি কাভার্ডভ্যান নিয়ে গোয়ালন্দ মোড়ে পৌঁছান। দালালের মাধ্যমে দেড় হাজার টাকা দিয়ে তিনি শনিবার রাতে ঘাটে আসতে পেরেছেন। এখানেও প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে আটকে আছেন। সড়কে আটকে থাকা অবস্থায় থাকা-খাওয়া ও শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
টাকা নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি আগে পারাপারের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক তারক পাল দাবি করেন- এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা নেই। এদিকে ঘাটে বিআইডব্লিউটিসির টিকিট কাউন্টারেও পণ্যবাহী গাড়ি থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি পারাপার বন্ধের কারণে দৌলতদিয়ায় গাড়ির চাপ বাড়ার পর অবৈধ এই লেনদেন বেড়ে গেছে। ঘাটে এসে এক-দুই দিন আটকা পড়া এড়িয়ে দ্রুত পারাপারের জন্য টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন পরিবহন কর্মীরা।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, কাউন্টার থেকে গোয়ালন্দ মোড় পর্যন্ত গাড়ির চাপ রয়েছে। সেসব এলাকায় কে কী করল, তা তাদের দেখার বিষয় নয়। তবে কাউন্টারে কেউ বাড়তি টাকা নিলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার হয়ে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ২০০ পণ্যবাহী গাড়ি পার হতো। এসব গাড়ি এখন দৌলতদিয়ায় চলে আসছে। ফলে এই ঘাটে গাড়ির চাপ কমানো যাচ্ছে না। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার চালু না হলে দৌলতদিয়া ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।
Leave a Reply