গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট বইছে বিপৎসীমার উপর দিয়ে। এছাড়া তিস্তা, করতোয়াসহ জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে এসব নদ-নদীবেষ্টিত চর-দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতশত পরিবার। তলিয়ে গেছে জমির ফসল। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট।
পানিতে ভাসছে জীবন। ভীষণ কষ্টে কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত। গত তিনদিন ধরে বাড়ছে বানভাসীদের দুর্ভোগ। চারদিকে থৈ থৈ পানি, কিন্তু বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। অতিবৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শুক্রবার (৩ সেপ্টম্বর) ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যার্ত মানুষের।
পানিতে তলিয়ে থাকা মানুষের ঘুম নেই। খুঁজছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই। অসুস্থ শরীর নিয়ে অসহায় বয়স্করা। বানের তোড়ে কচুরিপানার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে গাইবান্ধার চার উপজেলার শতাধিক চর-দ্বীপ চরের কয়েক লাখ মানুষ। সবকিছু হারিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন এদিক ওদিক অসহায় মানুষগুলো।
এছাড়া গত কয়েকদিনে ব্রহ্মপুত্রে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারি, মধ্য খাটিয়ামারি, দক্ষিণ খাটিয়ামারি, পশ্চিম খাটিয়ামারি, চন্দনস্বর, উজালডাঙ্গা, গুপ্তমনি, কাওয়াবাধা ও মানিককর গ্রামে গত এক সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ বৃষ্টি ও খাদ্য সমস্যার কারণে চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
বানভাসীদের ভোগান্তির শেষ নেই, কোনো ত্রাণ সহায়তাও পাচ্ছেন না তারা। প্লাবিত জনপদের মানুষগুলোর দাবি স্থায়ী সমাধানের। শুধু তাই নয় নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার চার উপজেলার হাজার হাজার মানুষ অসময়ের বন্যায় এখন পানিবন্দি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সদর উপজেলার ১ হাজার ৫১৫ হেক্টর রোপা আমন ১৪৯৫ হেক্টর ও শাকসবজির ক্ষেত ২০ হেক্টর পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী বাংলা টাইমসকে বলেন, বানভাসীদের জন্য ৪০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও বরাদ্দ করা হবে।
Leave a Reply