হবিগঞ্জের লাখাইয়ে হাওরে নৌকাভ্রমণে যাওয়া নববধূকে ধর্ষণের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃ্ঙ্খলা বাহীনি।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) ভোররাত থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ও লাখাই থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তিন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে র্যাব দুইজনকে এবং পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে। অভিযান এখনও চলমান রয়েছে। অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বস্তারিত কিছু বলা যাবে না।
র্যাবের সিনিয়র এএসপি কামরুজ্জামনা জানিয়েছেন, র্যাব ধর্ষণ মামলার দুই নাম্বার আসামী ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে মিঠু মিয়া ও ইকবাল হোসেনর ছেলে সোলায়মান রনিকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে র্যাব অভিযান চালাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেন নির্যাতিত স্বামী।
মামলার আসামী হলো- মোড়াকড়ি গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে মুছা মিয়া (২৬), ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে মিঠু মিয়া (২১), পাতা মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২২), বকুল মিয়ার ছেলে সুজাত মিয়া (২৩), মিজান মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২৫), ইকবাল হোসেনর ছেলে সোলায়মান রনি (২২), ওয়াহাব আলীর ছেলে মুছা মিয়া (২০), রুকু মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (১৯)।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, বিচারক জিয়াউদ্দিন মাহমুদ তা আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর করতে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এক মাস আগে বিয়ে হয় মামলার বাদীর। স্ত্রীকে নিয়ে গত ২৫ আগস্ট দুপুরে বাড়ির পাশের হাওরে নৌকাভ্রমণে যান তিনি। নৌকায় নবদম্পতি, তাদের এক বন্ধু ও মাঝি ছিলেন।
বাদীর অভিযোগ, সে সময় আরেকটি নৌকায় করে গ্রামের কয়েকজন যুবক তাদের নৌকার গতি রোধ করেন। তাদের নৌকায় উঠে ওই যুবকরা তাকে ও তার বন্ধুকে মারধর করে আটকে রাখেন। তার স্ত্রীকে ওই নৌকায় তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখা হয়।
ওই নারীর স্বামী জানান, ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেন যুবকরা। এ কারণে বিষয়টি এত দিন গোপন করে রেখেছিলেন তিনি।
তবে ঘটনার চার দিন পর ওই যুবকরা ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ৯ লাখ টাকা দাবি করেন বলে জানান নববধূর স্বামী।
তিনি বলেন, টাকা না দেয়ায় এলাকার কয়েকজনের কাছে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয় ওই যুবকরা। এর মধ্যে তার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থাও খারাপ হতে থাকে। এরপর তিনি স্ত্রীকে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) নাদিরা বেগম বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগে এক নারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে বোঝা যাবে না।
Leave a Reply