ভোলার বোরহানউদ্দিনে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে ভরা মৌসুমেও জেলেদের জালে মিলছে না ইলিশ। প্রতিদিন জাল ফেললেও হতাশ হয়ে ফিরছেন নদী থেকে জেলেরা। ফলে অনেকটা ইলিশ শূন্য উপজেলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া পাড়ের ইলিশের আড়তগুলো। এদিকে বাজারে সামান্য ইলিশ আসলেও,দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
মো. গিয়াস উদ্দিন মাঝি (৫৯) বলেন, এখনতো পুরা মাছের সিজন, কিন্তু নদীতে মাছ অনেক কম, আজকে চাইর-পাঁচ দিন তালাই মাছ কম। মাছ পামু আশা আছে সামনে মণি অমাবস্যায়। গেছে কাইল আট আলি মাছ পাইছি, এতে আমাদের চা নাস্তার খরচও অয় না।
এই মাঝি আরো বলেন, টলারে সাত-আট জন লোক কাজ করে। এক এক জনের বাড়িতে পাঁচ-ছয় কইরা খাওইনা, যখন নদিতে মাছ কম থাকে তখন, দেনা করে চলি। আবার মাছ বেশি হইলে, দেনা হোদ করি।
সদ্য নদী থেকে মাছ শিকার করে আসা জাকির মাঝি বলেন, নদীতে মাছ অনেক কম। যে মাছ পাই তাতে তেলের টাকাই হয় না। সব খরচ দিয়া এক একজনে ৫০/১০০ টাকা করে থাকে। তাতে সংসার চালানো দূরের কথা, দেনা থাকতে হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, জেলেরা নদী থেকে নিরাশ হয়ে ফিরছেন অনেকেই। কেউ দুই/ তিন হালি ছোট ছোট ইলিশ মাছ নিয়ে ফিরছেন। মাছ বাজারেও ইলিশ মাছ দাম চওড়া।
ক্রেতা সুজন বালা বলেন, ছোট ৮ পিচ ইলিশের দাম ১৫০০ টাকা বলছে বিক্রেতা। তাই কিনতে না পেরে ১ কেজি ৮শ গ্রাম পোয়া মাছ নিলাম।
তবে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনে পূর্ণিমা রয়েছে। সে সময় এ অঞ্চলে ইলিশের দেখা মিলবে বলে আশাবাদী তারা। নদীর নাব্য সংকটে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে ও বৃষ্টি কম হওয়ায় সমুদ্র থেকে নদীর অভিমুখে সাধু পানির চাপ কমে গেছে। এ কারণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহাম্মদ আঁখন বলেন, আমাদের যারা গবেষক আছে তারা গবেষণা করে বলতে পারবে। তবে এরকম হইতে পারে যে, ইলিশতো সাগরের মাছ। এরাতো মূলত নদীতে আসে ডিম ছাড়ার জন্য। সারা বিশ্বেই এখন ক্লাইমেন্ট চেইঞ্জ,আর জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যেও বিলম্ব হতে পারে। আমাদের গবেষকদল যারা অাছে তারা গবেষণা করে বলা যাবে যে,কী কারনে মাছ কম হতে পারে?
তিনি আরো বলেন, আমরা আশা ছাড়ি নাই । এখনওতো অনেক সময় আছে, হয়তো এক দেড় মাস পরে মাছ পরবে। আর মাছ যে একেবারে পরে না তানা, যারা সগরে যাচ্ছে,নামায় যাচ্ছে, তারা মাছ পাচ্ছে।
Leave a Reply