১৩ বছর আগে আফগানিস্তানে আটকে পড়া জো বাইডেনকে উদ্ধার করতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন৷ সেই তিনিই এখন প্রাণের ভয়ে পরিবারকে নিয়ে লুকিয়ে রয়েছেন৷ সেই গোপন ডেরা থেকেই এবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাইডেনের কাছে সাহায্যের জন্য আর্জি জানালেন আফগানিস্তানের নাগরিক মহম্মদ৷ পেশায় অনুবাদক মহম্মদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে কাতর আর্জি জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাকে ভুলে যাবেন না প্রেসিডেন্ট!’
দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন৷ মহম্মদের আশঙ্কা, আমেরিকানরা আফগানিস্তান ছাড়ার পরে তাঁর উপরে শোধ তুলতে পারে তালিবানরা৷ সেই কারণেই স্ত্রী এবং চার সন্তানকে নিয়ে আপাতত গোপন আস্তানায় লুকিয়ে থাকা অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি৷ তালিবানদের ভয়ে নিজের পুরো নামও জানাতে চাননি মহম্মদ৷
কিন্তু কী হয়েছিল ১৩ বছর আগে? ২০০৮ সালে আমেরিকার তৎকালীন সেনেটর জো বাইডেন এবং আরও দু’ জন প্রাক্তন সেনেটর আফগানিস্তানে হেলিকপ্টারে করে যাওয়ার সময় প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে পড়েন৷ বাধ্য হয়ে আফগানিস্তানের একটি প্রত্যন্ত উপত্যকায় নামতে বাধ্য হয় বাইডেনদের হেলিকপ্টার৷ সেই সময় মার্কিন বাহিনীর যে দলটি বাইডেনদের উদ্ধার করেছিল, তার অন্যতম সদস্য ছিলেন মহম্মদ৷ প্রায় তিরিশ ঘণ্টা মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে বাইডেনদের পাহারা দিয়েছিলেন মহম্মদ৷
ভাল খবর হল, আফগানিস্তান থেকে মহম্মদের এই কাতর আর্তি সম্ভবত মার্কিন প্রেসিডেন্টের কানে পৌঁছেছে৷ হোয়াইট হাউজের তরেফ মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব জেন সাকি আশ্বস্ত করেছেন, মহম্মদ এবং তাঁর পরিবারকে উদ্ধার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারা৷
একা মহম্মদ নন৷ গত কুড়ি বছরে যে আফগানরা মার্কিন বা ন্যাটো বাহিনীর হয়ে কাজ করেছেন, তাঁরা এখন তালিবানদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় এ ভাবেই আত্মগোপন করে আছেন৷ যাঁরা সুযোগ পেয়েছেন, দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন৷
তবে এই মুহূর্তে মহম্মদের আমেরিকায় আশ্রয় পাওয়ার ক্ষেত্রে সবথেকে বড় বাধা আমেরিকার ভিসা নীতি৷ ট্রাম্প আমলে তৈরি হওয়া এই নীতি অনুযায়ী, ভিসার আবেদন করলে তার অনুমোদন পেতেই প্রায় এক বছর সময় লেগে যাবে মহম্মদ এবং তাঁর পরিবারের৷ যদিও এই জটিল পদ্ধতির সরলীকরণের কাজে হাত দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন৷
যদিও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহম্মদ যে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করছিলেন, তিনি তাঁর ভিসার আবেদন সংক্রান্ত সমস্ত কাগজই হারিয়ে ফেলেন৷ দেশ ছাড়ার জন্য মহম্মদ কয়েকদিন আগে কাবুল বিমানবন্দরেও পৌঁছেছিলেন৷ কিন্তু সেখান থেকে মার্কিন বাহিনীর তরফে তাঁকে জানানো হয়, মহম্মদ বিমানে ওঠার অনুমতি পেলেও তাঁর পরিবার যেতে পারবে না৷ ফলে ফিরে আসতে হয় মহম্মদকে৷ আপাতত আফগানিস্তানে লুকিয়ে থাকা মহম্মদের ভরসা এখন একজনই, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷
সূত্র : নিউজবংলা১৮
Leave a Reply